সোরিয়াসিস এক ধরনের সাধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদী চর্মরোগ। এতে মলিন আঁশযুক্ত ছোপ দেখা যায়, যা উঠে যাওয়ার পর লালচে আভা বা সামান্য রক্তক্ষরন হতে পারে। সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব দিন দিন বাড়ছে।
কারণ:
- এ রোগের মূল কারণ এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
- তবে বংশে কারো থাকলে হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
- বারবার গলায় ইনফেকশন, সূর্যের আলো, কোন কোন ঔষধ, মানসিক চাপ, শারীরিক আঘাত ইত্যাদি কারণে সোরিয়াসিস বাড়তে পারে।
- সোরিয়াসিস কোন প্রকার সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ নয়।
কোন বয়সে এ রোগ হয়?
ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে ৭০ বৎসর পর্যন্ত যে কোন নারী বা পুরুষের এই রোগ হতে পারে। তবে ১৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়।
এই রোগ কি খুব মারাত্মক?
- সোরিয়াসিস কোন মারাত্মক জীবনঘাতি রোগ নয়। তবে এই রোগের তীব্রতা বিভিন্ন রকম হতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ত্বকে কয়েকটি আঁশ যুক্ত ছোপ দেখা যায়।
- এই রোগে নখ এবং গিঁট আক্রান্ত হতে পারে। কদাচিৎ বিভিন্ন কারণে সারা গায়ে তীব্র আকারে প্রকাশ পেতে পারে।
- বর্তমানে এই রোগের উপসর্গ নিরাময়ে বিভিন্ন উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে।
সোরিয়াসিস কি নিরাময়যোগ্য ব্যাধি?
না, এখন পর্যন্ত এটি সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য রোগ নয়। এই রোগ সেরে যাওয়ার পর আবারও হতে পারে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গ বা লক্ষণ গুলো কমিয়ে রাখা সম্ভব। আর যে কারণে এই রোগ বাড়ন্ত বা শুরু হয়েছে তা নিশ্চিত ভাবে সরিয়ে বা দমিয়ে রাখতে পারলে, দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকা সম্ভব।
খাবার বিধি নিষেধ আছে কি?
হ্যা, কিছু কিছু খাদ্য সোরিয়াসিসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যেমন গরু, খাসি, লালমাংস, টক জাতীয় ফল, অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও মশলা যুক্ত খাবার, সকল প্রকার ফাস্টফুড, ধুমপান, মদ্যপান এবং জর্দা। এ গুলো সম্পূর্ণ ভাবে বর্জন করতে হবে।
সোরিয়াসিস রোগীর উপকারী খাবার:
সামুদ্রিক মাছ, মিষ্টি আলু, ব্রকলি, শাক, বাধাকপি।
কোন কোন ঔষধে সোরিয়াসিস বাড়ে?
Prednisolone, Betnelan, Oradexon, Inj.Triamcenolone Acetonide, উচ্চ রক্ত চাপের ওষুধ Betablocer, A C E Inhibitor, Terbinafin,
রক্তের চর্বি কমানোর ওষুধ, ব্যাথারজন্য NSAID জাতীয় ঔষধ, লিথিয়াম, ম্যালেরিয়া রোগের ঔষধে সোরিয়াসিস রোগ বাড়ে। তাই উপরোক্ত ঔষধ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খাবেন না।
রোগীর জন্য উপদেশ:
- শুস্ক ত্বকে সোরিয়াসিস বৃদ্ধি পায়, ত্বক কে আদ্র রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
- মাত্রাতিরিক্ত সূর্যালোক হতে সাবধান থাকবেন, তবে স্বল্প সময়ের জন্য সোরিয়াসিস আক্রান্ত ত্বক সূর্যালোকে রাখলে উপকার পাওয়া যায়।
- গোসলের সময় ত্বক বেশি ঘসাঘসি করবেন না।
- দুশ্চিন্তা, রাগ, মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন।
- প্রেসক্রিপশন অনুসারে নিয়মিত ঔষধ সেবন করবেন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত ঔষধ বন্ধ করবেন না। কোনো পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ডাঃ মোহাম্মদ হোসেন
MBBS, DDV (DMC), FRSH(London)
সিনিয়র কনসালট্যান্ট
চর্ম, সেক্স, এলার্জি ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ
Email: milon7911@yahoo.com